জানুয়ারিতে লেখা হয় দুর্ভাগ্য-লিখন,
আর তখন, নির্লিপ্ত দুপুর আকাশে আঁকিবুঁকি কাটে
নীল পৃথিবীর দশ কিনার থেকে
উপছে পড়া সোনার মত মদ।
তেতো, সবুজ আঙুরের মত নিষ্ফল দিন
গোপন অশ্রু নিয়ে, বিভ্রান্তি নিয়ে, থোকা থোকা মিলিত হয়
তারপর একদিন সেই পুঞ্জীভূত আঙুর
নিজেকে দৃশ্যমান করে।
ফলগুলো যতদিন ঝাঁঝালো হবে,
ততদিন বেদনা, বীজ, ভয় থেকে জন্ম নেওয়া
ধুকপুকে সবকিছু পেকে উঠবে গ্রীষ্মের তামাম আঁচে।
এরপর, ভাগ হবে সে দুঃখ। সত্তা দেবে তার সতেজ নিঃশ্বাস,
ঘরের তাবৎ আবর্জনা সাফ করে ফেলা হবে,
আর একটি অখণ্ড রুটি পড়ে থাকবে খাবার টেবিলে।
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০৩/০১
(`Misfortunes of the month of January', XLI From: ‘Cien sonetos de amor’)
Friday, 28 February 2014
Wednesday, 26 February 2014
(১৭) তোমাকে কোনো লবনের স্বাদ-মাখা-গোলাপ
তোমাকে কোনো লবনের স্বাদ-মাখা-গোলাপ, পোখরাজের ফুল
অথবা আগুনের ছুঁড়ে-ফেলা কন্টকিত দেব্পুষ্পের মত
ভালবাসি না আমি। তোমাকে ভালবাসি নিভৃতে,
গোপন প্রেমের সামগ্রী যেভাবে ভালবাসে মানুষ
রাত্রি আর সত্তার পরিসরে। পুষ্প-শূন্য বৃক্ষের ভেতর
যেমন ফুলের আলো থাকে, সেভাবে। আর তোমার প্রেম
মাটির দুর্দান্ত সৌরভে ভরে দেয় আমার শরীর।
তোমাকে ভালবাসার কোনো কারণ, নিয়ম অথবা ক্ষণ জানা নেই
তাই তোমাকে সত্য, দ্বিধাহীন, আনম্র ভালবাসি
এই ভাবে ছাড়া ভালবাসার অন্য কোনো উপায়
নেই আমার কাছে,
নেই আমি-তুমির দ্বৈততা;
আমার বুকে-রাখা হাতটি তোমার আমার নিজের হাত,
আমার ঘুমিয়ে-পড়া চোখ দুটি তোমার নয়ন।
(‘I do not love you as if you were brine-rose, topaz,’ XVII From: ‘Cien sonetos de amor’ - Pablo Neruda)
~অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/২/১৮
অথবা আগুনের ছুঁড়ে-ফেলা কন্টকিত দেব্পুষ্পের মত
ভালবাসি না আমি। তোমাকে ভালবাসি নিভৃতে,
গোপন প্রেমের সামগ্রী যেভাবে ভালবাসে মানুষ
রাত্রি আর সত্তার পরিসরে। পুষ্প-শূন্য বৃক্ষের ভেতর
যেমন ফুলের আলো থাকে, সেভাবে। আর তোমার প্রেম
মাটির দুর্দান্ত সৌরভে ভরে দেয় আমার শরীর।
তোমাকে ভালবাসার কোনো কারণ, নিয়ম অথবা ক্ষণ জানা নেই
তাই তোমাকে সত্য, দ্বিধাহীন, আনম্র ভালবাসি
এই ভাবে ছাড়া ভালবাসার অন্য কোনো উপায়
নেই আমার কাছে,
নেই আমি-তুমির দ্বৈততা;
আমার বুকে-রাখা হাতটি তোমার আমার নিজের হাত,
আমার ঘুমিয়ে-পড়া চোখ দুটি তোমার নয়ন।
(‘I do not love you as if you were brine-rose, topaz,’ XVII From: ‘Cien sonetos de amor’ - Pablo Neruda)
~অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/২/১৮
(৬৯) হয়ত সেটাই আমার জন্য না-থাকার সামিল
হয়ত সেটাই আমার জন্য না-থাকার শামিল,
তোমার থাকা, অথবা একটি নীল ফুলের মতন
আমার সমস্ত রোদ শুষে নিয়ে তোমার চলে যাওয়া,
কুয়াশা আর পাথর কেটে হেঁটে যাওয়া তোমার -- এসব ছাড়া।
যে অদৃশ্য মশাল তোমার হাতে এক সোনালী ঝাড়বাতি,
আর কেউ যা দেখেনি, আমি ছাড়া,
যে-হাতে আমি অনুভব করেছি গোলাপের গনগনে আঁচ
আর কেউ না করুক, সেই হাত ছাড়া।
আমার জীবন চিনে নিতে তোমার এই আসা,
বাতাসের থিরথিরে গম, গোলাপের আঘ্রাণ,
তোমাকে ছাড়া।
আমি আছি তুমি আছ তাই। তুমি থাকো, তাই আমি থাকি।
আর ভালোবাসার নিবিড় পথ ধরেই
বাঁচব – তুমি, আমি, আমরা দুজন।
( ‘Perhaps not to be is to be without your being.’
LXIX From: ‘Cien sonetos de amor’ - Pablo Neruda)
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০২/২০
তোমার থাকা, অথবা একটি নীল ফুলের মতন
আমার সমস্ত রোদ শুষে নিয়ে তোমার চলে যাওয়া,
কুয়াশা আর পাথর কেটে হেঁটে যাওয়া তোমার -- এসব ছাড়া।
যে অদৃশ্য মশাল তোমার হাতে এক সোনালী ঝাড়বাতি,
আর কেউ যা দেখেনি, আমি ছাড়া,
যে-হাতে আমি অনুভব করেছি গোলাপের গনগনে আঁচ
আর কেউ না করুক, সেই হাত ছাড়া।
আমার জীবন চিনে নিতে তোমার এই আসা,
বাতাসের থিরথিরে গম, গোলাপের আঘ্রাণ,
তোমাকে ছাড়া।
আমি আছি তুমি আছ তাই। তুমি থাকো, তাই আমি থাকি।
আর ভালোবাসার নিবিড় পথ ধরেই
বাঁচব – তুমি, আমি, আমরা দুজন।
( ‘Perhaps not to be is to be without your being.’
LXIX From: ‘Cien sonetos de amor’ - Pablo Neruda)
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০২/২০
(৩৭) ভালবাসা, কী উন্মাদ এক রুপালি ঝলক
ভালবাসা, কী উন্মাদ এক রুপালি ঝলক
কী আশ্চর্য এক বেগুনি আশংকা, কাছে এসে শীতল পদক্ষেপে
উঠে গেছ হৃদয়ের সেই নিষিদ্ধ ঘরে
সময় ঘিরেছে যাকে কুয়াশায়।
কেউ হয়ত জানবে না, কেমন করে
শুধুমাত্র শালীন সুন্দরতা দিয়ে দুর্গ গড়েছি,
দুর্জয়, স্ফটিকের মত ; কী ভাবে রক্ত তার স্বশাসন ভুলে
শীত ঢেলে নিয়েছে শরীরের নিঃসঙ্গ নালায়।
তাই ভালবাসা
তোমার ঠোঁট, ত্বক, বেদনা, বিচ্ছুরণ
জীবনের উপহার, বৃষ্টি, প্রকৃতির ভরা উত্সব এনেছে এখানে
মাটি-মাখা বীজের শরীরকে হালকা করে
সোনালী শীষের মাদকতা জাগিয়েছে গোপনে,
সতেজ করেছে মাটির ফসলী আগুন!
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০২/২৮
(‘Oh love, oh mad light-beam, threat of violet’
XXXVII From: ‘Cien sonetos de amor’ -Pablo Neruda)
কী আশ্চর্য এক বেগুনি আশংকা, কাছে এসে শীতল পদক্ষেপে
উঠে গেছ হৃদয়ের সেই নিষিদ্ধ ঘরে
সময় ঘিরেছে যাকে কুয়াশায়।
কেউ হয়ত জানবে না, কেমন করে
শুধুমাত্র শালীন সুন্দরতা দিয়ে দুর্গ গড়েছি,
দুর্জয়, স্ফটিকের মত ; কী ভাবে রক্ত তার স্বশাসন ভুলে
শীত ঢেলে নিয়েছে শরীরের নিঃসঙ্গ নালায়।
তাই ভালবাসা
তোমার ঠোঁট, ত্বক, বেদনা, বিচ্ছুরণ
জীবনের উপহার, বৃষ্টি, প্রকৃতির ভরা উত্সব এনেছে এখানে
মাটি-মাখা বীজের শরীরকে হালকা করে
সোনালী শীষের মাদকতা জাগিয়েছে গোপনে,
সতেজ করেছে মাটির ফসলী আগুন!
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০২/২৮
(‘Oh love, oh mad light-beam, threat of violet’
XXXVII From: ‘Cien sonetos de amor’ -Pablo Neruda)
(৮৮) মার্চের লুকোনো রোদ ফিরে আসে
মার্চের লুকোনো রোদ ফিরে আসে
আকাশে সাঁতরায় অতিকায় মাছ
মাটি-রং বাষ্পরা এগোয় চুপিচুপি
আর একে একে সব কিছু নীরব হয়ে যায়।
হঠাৎ, আকাশের অবিশ্বাস কাটিয়ে
তুমি সমুদ্র আর আগুন মেলাও
মেলাও শীতার্ত, ক্ষয়িষ্ণু জাহাজ
আর গীটারে রিনরিনে প্রেমের মূর্ছনা।
আহা ভালবাসা, গোলাপ আমার, জলকন্যা,
গঙ্গাফড়িং, অদৃশ্য সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাওয়া নৃত্যময় আঁচ,
ঘুমহীন গোলকধাঁধায় তুমি রক্ত-জাগানিয়া!
নোনা ঢেউগুলো তাই আকাশ ছোঁয়
সাগর ভুলে যায় জাহাজের ভেট, সিংহ-নিনাদ, 
আর পৃথিবী বাঁধা পড়ে বেবাক আঁধারের জালে।
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০২/২৪
(‘March days return with their covert light’, LXXXVIII From: ‘Cien sonetos de amor’ - Pablo Neruda )
আকাশে সাঁতরায় অতিকায় মাছ
মাটি-রং বাষ্পরা এগোয় চুপিচুপি
আর একে একে সব কিছু নীরব হয়ে যায়।
হঠাৎ, আকাশের অবিশ্বাস কাটিয়ে
তুমি সমুদ্র আর আগুন মেলাও
মেলাও শীতার্ত, ক্ষয়িষ্ণু জাহাজ
আর গীটারে রিনরিনে প্রেমের মূর্ছনা।
আহা ভালবাসা, গোলাপ আমার, জলকন্যা,
গঙ্গাফড়িং, অদৃশ্য সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাওয়া নৃত্যময় আঁচ,
ঘুমহীন গোলকধাঁধায় তুমি রক্ত-জাগানিয়া!
নোনা ঢেউগুলো তাই আকাশ ছোঁয়
সাগর ভুলে যায় জাহাজের ভেট, সিংহ-নিনাদ, 
আর পৃথিবী বাঁধা পড়ে বেবাক আঁধারের জালে।
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
২০১৪/০২/২৪
(‘March days return with their covert light’, LXXXVIII From: ‘Cien sonetos de amor’ - Pablo Neruda )
তুমি স্তব্ধ হও, এই বাসনা করি আমি
তুমি স্তব্ধ হও, এই বাসনা করি আমি
তোমার নিঃশ্বাস এতই ধ্বনিহীন, যেন তুমি নেই যেন প্রান্তর থেকে শুনছ আমায়
আমার কন্ঠের অতীত থেকে,
তোমার চোখ যেন পাখির মত নিরুদ্দেশ,
তোমার ওষ্ঠপুট নিথর, চুম্বনের সীলমোহরে
আমার সত্তার পরমানু ছড়িয়ে আছে তাবদ সামগ্রীতে
আর সেই সব সজীব কণিকা থেকে
যেন তুমি উথ্থিত হও, সত্তা আমার,
যেন তুমি প্রজাপতি, স্বপ্ন অথবা, বিষণ্ণতা
তুমি স্তব্ধ হও এই বাসনা করি আমি,
যেন তুমি এক উদাস কান্নার ধ্বনি
ঘুঘুর সুরেলা কন্ঠে কেঁদে ওঠা প্রজাপতি,
দিগন্ত থেকে শুনছ আমায়
যেন আমার কন্ঠ তোমায় স্পর্শ করে না ।
আর সেই নীরবতার ভেতর
আমি আনম্র এসে বসি তোমার কাছে
তোমার নৈঃশব্দের ভাষায় আমরা কথা বলি
যে নৈঃশব্দ সাঁঝ-বাতির মতন উজ্জ্বল,
সরল, আংটির মতন, এক ঝাঁক নীহারিকা-ভরা রাত তুমি যেন
তারার মত স্বচ্ছ, সুদূর তোমার নিঃস্তব্ধতা
তুমি স্তব্ধ হও, এই বাসনা করি আমি
তোমার নিঃশ্বাস এতই ধ্বনিহীন,
যেন তুমি নেই, যেন তুমি শোক-সুনিবিড়, মৃত ।
একটি শব্দ তোমার, তোমার হাসি, যথেষ্ট তখন
যথেষ্ট আমার আনন্দের জন্য,
আনন্দ, যেহেতু এই মনে হওয়াগুলি কিছুই সত্য নয় |
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
(I like for you to be still, from 'Twenty Love Poems and a Song of Despair', 1924, Pablo Neruda)
তোমার নিঃশ্বাস এতই ধ্বনিহীন, যেন তুমি নেই যেন প্রান্তর থেকে শুনছ আমায়
আমার কন্ঠের অতীত থেকে,
তোমার চোখ যেন পাখির মত নিরুদ্দেশ,
তোমার ওষ্ঠপুট নিথর, চুম্বনের সীলমোহরে
আমার সত্তার পরমানু ছড়িয়ে আছে তাবদ সামগ্রীতে
আর সেই সব সজীব কণিকা থেকে
যেন তুমি উথ্থিত হও, সত্তা আমার,
যেন তুমি প্রজাপতি, স্বপ্ন অথবা, বিষণ্ণতা
তুমি স্তব্ধ হও এই বাসনা করি আমি,
যেন তুমি এক উদাস কান্নার ধ্বনি
ঘুঘুর সুরেলা কন্ঠে কেঁদে ওঠা প্রজাপতি,
দিগন্ত থেকে শুনছ আমায়
যেন আমার কন্ঠ তোমায় স্পর্শ করে না ।
আর সেই নীরবতার ভেতর
আমি আনম্র এসে বসি তোমার কাছে
তোমার নৈঃশব্দের ভাষায় আমরা কথা বলি
যে নৈঃশব্দ সাঁঝ-বাতির মতন উজ্জ্বল,
সরল, আংটির মতন, এক ঝাঁক নীহারিকা-ভরা রাত তুমি যেন
তারার মত স্বচ্ছ, সুদূর তোমার নিঃস্তব্ধতা
তুমি স্তব্ধ হও, এই বাসনা করি আমি
তোমার নিঃশ্বাস এতই ধ্বনিহীন,
যেন তুমি নেই, যেন তুমি শোক-সুনিবিড়, মৃত ।
একটি শব্দ তোমার, তোমার হাসি, যথেষ্ট তখন
যথেষ্ট আমার আনন্দের জন্য,
আনন্দ, যেহেতু এই মনে হওয়াগুলি কিছুই সত্য নয় |
-অনুবাদ: আনন্দময়ী মজুমদার
(I like for you to be still, from 'Twenty Love Poems and a Song of Despair', 1924, Pablo Neruda)
Subscribe to:
Posts (Atom)